সিরিয়া থেকে হামলার অভিযোগ তুলে দেশটির দক্ষিণাঞ্চলে বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। মঙ্গলবার (৩ জুন) মধ্যরাত থেকে সিরিয়ার দেরা প্রদেশে একাধিক দফায় এই হামলা চালায় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী (আইডিএফ)।
সিরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলের এই আগ্রাসন অঞ্চলটিকে অস্থিতিশীল করে তুলতে চায়। তারা একে “সিরিয়ার সার্বভৌমত্বের সরাসরি লঙ্ঘন” বলে অভিহিত করেছে।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ এই হামলার দায় দিয়েছেন সিরিয়ার অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারার ওপর। তিনি দাবি করেন, সিরিয়ার দিক থেকে ইসরায়েলের দিকে দুটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়, যেগুলো খোলা জায়গায় পড়লেও কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
ব্রিটেনভিত্তিক পর্যবেক্ষণ সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, ইসরায়েলের বিমান হামলায় কুনেইত্রা ও দেরা অঞ্চলে প্রচণ্ড বিস্ফোরণ হয়। তবে হতাহতের সংখ্যা এখনও নিশ্চিত নয়।
উল্লেখ্য, বাশার আল-আসাদের শাসন পতনের পর থেকেই সিরিয়ায় হামলার তীব্রতা বাড়িয়েছে ইসরায়েল। ইসরায়েলি গণমাধ্যম জানিয়েছে, আসাদের পতনের পর এবারই প্রথম সিরিয়া থেকে ইসরায়েলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হলো।
অন্যদিকে, সিরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, সিরিয়া থেকে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের অভিযোগ এখনো যাচাই হয়নি।
গোলান হাইটস ইস্যুতেও ইসরায়েল এখনো আগ্রাসী অবস্থানে। ১৯৭৬ সালে সিরিয়ার কাছ থেকে দখল করা এ অঞ্চলে বসতি সম্প্রসারণের পাশাপাশি সিরিয়ার সামরিক স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে তারা।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সিরিয়ার ওপর থাকা দশ বছরের পুরনো নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার ঘোষণা দেন। এরপর থেকেই উত্তেজনা আরও বেড়েছে।
গত মাসে ইসরায়েল দামেস্কে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের কাছে হামলা চালায়। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, “এই হামলা ছিল একটি স্পষ্ট বার্তা— আমরা দামেস্কের দক্ষিণে কোনো সেনা মোতায়েন মেনে নেব না।”
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসও এই হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, এটি ছিল “সিরিয়ার সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন”।